শান্তির জন্য যুদ্ধ
উপন্যাস
প্রকাশ: ফেব্রুয়ারি ২০২১
আন্দামান সমুদ্রে, নিজ হাতে মায়ের মৃতদেহ ছুঁড়ে ফেলতে হয়েছিল তাকে।
নীল জলে কালো বোরখায় ঢাকা কাফনে মোড়ানো মায়ের সাথে সাথে
ডুবে গিয়েছিল তার জাগতিক সব ‘ভয়’ ও ‘আকাঙ্ক্ষা’ ।
মানুষ যা হারায়, ফিরে পায় তার চেয়েও বেশি।
সবার অজান্তে তাকদির তাকে তুলে নিয়েছিল
তার জাতীকে নেতৃত্ব দেয়ার জন্য ।
সেই নেতৃত্ব তাকে পৌঁছে দিয়েছিল অনিন্দ্য সুন্দর এক ফ্রন্টলাইনে ……
Book Trailer –
পাঠক প্রতিক্রিয়া
পাঠক প্রতিক্রিয়া – ১
বছরের পর বছর কিংবা যুগের পর যুগ ধরে অন্যায় অত্যাচার আর নিষ্পেষণের মাধ্যমে যখন একটা জাতিকে ভঙ্গুরপ্রায় করে নিজ ভূমি থেকে উৎখাত করে দেওয়া হয় তখন তাদের অসহায়ত্ব তাদেরকে আরো দূর্বল করে তোলে। তখন তাদের নিজেদের বলে কোনো স্থান থাকেনা, নিজেদের বলে কোনো দেশ থাকেনা, নিজেদের বলে কোনো অধিকার থাকেনা।
read more...
শরনার্থী শিবিরে মানবেতর জীবন যাপন তখন সেই দূর্বলদের করে তুলে আরো ভঙ্গুর৷ একদিকে শরনার্থী শিবিরের দীর্ঘরাত তাদের জীবনকে করে তুলে দুঃসহনীয়, আর অন্যদিকে তাদের সেই দূর্বলতাকে পুঁজি করে বিভিন্ন চিন্তাধারার মানুষ বিভিন্নভাবে ব্যবসা জুড়ে বসে থাকে৷ অসহায় শরনার্থীরা তখন হয়ে উঠে হিংস্র হায়নাদের লোভ কিংবা লিপ্সা নিবারনের শিকার৷ আর সেই ভঙ্গুর জাতির মাঝে তখন কোনো রকমে একটু স্ফুলিঙ্গ জ্বালিয়ে তুলতে পারলে সেটা দাউ দাউ করে জ্বলে উঠে তৈরী করে আগুনের লেলিহান শিখা। ঠিক যেমন করে একটা ছোট্টো দেয়াশলাই কাঠি পারে বিশাল কোনো গহীন অরণ্যে ঢাকা বনাঞ্চলকে পুড়িয়ে ছাড়খাড় করে দিতে৷
গল্পটা একটা ভঙ্গুর প্রায় অসহায় জাতীর নিজ ভূমি হারিয়ে শরনার্থী হয়ে মানবেতর জীবন যাপনের। গল্পটা সেই জাতির মাঝে একটা নতুন নেতার জন্ম নেওয়ার। গল্পটা দগ্ধ ক্ষতের মাঝে নতুন কোনো আশা আলো জন্ম নেওয়ার। গল্পটা একটা নতুন বাহিনী তৈরী হওয়ার যাদের নতুন করে আর কিছুই হারানোর নেই৷
বাংলাদেশে বর্তমানে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় শরনার্থী শিবিরটা অবস্থিত। মায়ানমারের আরাকান থেকে বিতাড়িত হওয়া অত্যাচারিত রোহিঙ্গাদের থেকে যখন পুরো পৃথিবী মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছে বা বিভিন্ন ব্যবসায়িক চিন্তা করছে তাদের ঘিরে, তখন বাংলাদেশ তাদের জন্য নিজের বুকে জায়গা করে দিয়ে গড়ে তুলেছে অসামান্য মানবিক দৃষ্টান্ত ৷ সেই রোহিঙ্গাদের নিয়েই এই গল্পটা লিখেছেন লেখক।
আন্দামান সমুদ্রে নিজের মায়ের লাশ ফেলে দেওয়ার পর দূর্বলচিত্তের একজন অতি সাধারন তরুণ নাসিরুদ্দিন হয়ে উঠেছিলো নির্ভীক আর সাহসী৷ ভয় কিংবা আকাঙ্খা যখন কোনো মানুষের হারিয়ে যায় তখন তার সাহসও হয়ে উঠে আকাশচুম্বী৷ রোহিঙ্গা শরনার্থী শিবিরে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন অনাচারের বিরুদ্ধে রুখে দাড়াতে দাড়াতে একসময় নাসিরুদ্দিন হয়ে উঠে পুরো জাতির রোলমডেল৷ তারপর নিজ মাতৃভূমি ফিরে পাওয়ার আকাঙ্খা থেকে তারা নিজেরা গড়ে তোলে নিজেদের গেরিলা বাহিনী, যেই বাহিনীর নতুন করে কিছু হারানোর নেই। মায়ানমারের দূর্ধর্ষ সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে গড়ে উঠা সেই যুদ্ধে একটা আদর্শ নেতার মতোই নাসিরুদ্দিন ফ্রন্টলাইনে থেকে নিজের আদর্শে ছিলো মহীয়ান। পাশাপাশি মেজর শাফায়েতের চরিত্রটা আমাকে বিশেষভাবে মুগ্ধ করেছে।
এবার আসি আমার নিজস্ব মতামতে৷ প্রথম কথা হলো বইটি বিশ্ব রাজনীতির খুবই সেন্সিটিভ একটা বিষয়ের উপর লেখা। লেখক চেষ্টা করে গেছেন সুন্দরভাবে সেটা উপস্থাপন করার৷ গল্পের ফ্লো ভালো ছিলো৷ আরো দারুন লেগেছে গল্পের সাথে সাথে অসাধারন কিছু সুন্দর সুন্দর মুগ্ধ হওয়ার মতো লাইন। একদম ভেঙে যাওয়া একটা জাতি থেকে কিভাবে একটা দূর্ধর্ষ গেরিলা বাহিনী তৈরী হয়ে উঠে তার খুব সুন্দর বর্ণনা তুলে ধরেছেন লেখক। তবে কিছু কিছু জায়গায় একটু বেশি তাড়াহুড়ো হয়ে গিয়েছে বলে আমার ধারনা। প্রথম দিকে কাহিনী বিল্ডআপ হতে কিছুটা সময় লেগেছিলো খুব স্বাভাবিক। মাঝের দিকে গল্পের গতি ছিলো পার্ফেক্ট, সাথে মনোমুগ্ধকর বর্ণনা। কিন্তু শেষের দিকটা একটু তাড়াহুড়ো হয়ে গিয়েছে সেটা মানতেই হবে৷ কিছু কিছু ছোটো ছোটো জিনিস একটু নাটকীয়ভাবে উঠে এসেছে, যেটা কোনো বড় বিষয় বলে আমার মনে হয়নি। লেখকের সব লেখার মতো এখানেও দর্শন কিংবা আধ্মাতিকতার কিছুটা ছাপ রয়েছে যা মুগ্ধ করেছে। তবে সেই জিনিসটার পরিমাণও আরেকটু বেশি হতে পারতো।
সবকিছু মিলিয়ে ফ্রন্টলাইন খুব সিরিয়াস একটা বিষয়বস্তু নিয়ে গড়ে তোলা সাহসী আর সুন্দর একটা গল্প। গল্পের সাথে ধর্ম আর ইসলামের দারুন একটা মেলবন্ধন তৈরী করেছেন লেখক। ঘটনার মাঝে দারুন দারুন কোরআনের আয়াতগুলো মানুষকে ভাবাবে কিছুটা হলেও। যুদ্ধ, স্বাধীনতা, নিষ্পেষন কিংবা অধিকার, এসব বিষয়ের সাথে বৃহত্তর ইসলামের খুব সুন্দর সম্পর্ক দেখিয়েছেন লেখক। চাইলে পড়ে নিতে পারেন বইটি৷ গল্প কিংবা লেখনি যেমন উপভোগ্য তেমনি কিছুটা হলেও আপনার চিন্তার জগতে নাড়া দিয়ে ভাবতে বাধ্য করবে।
_________________________
বইটি থেকে মুগ্ধ করেছে এমন কয়েকটা লাইনঃ-
১. বিদায়বেলার প্রাকৃতিক এক ভাষা আছে, প্রকৃতির সেই বিদায় সম্ভাষণের নাম নিস্তব্ধতা।
২। পৃথিবীর অন্যান্য রাতের চেয়ে শরণার্থী শিবিরের রাত বড় দীর্ঘ।
৩। “খুব বেশি সৌন্দর্যের সামনে দাঁড়ালে খুশী হওযার বদলে মানুষের মন খারাপ হয়, কেন জানো?”
“কারণ সে বুঝতে পারে এই সৌন্দর্যের সামনে তার আর বেশিক্ষন থাকা হবে না৷ “read less
পাঠক প্রতিক্রিয়া – ২
আন্দামান সমুদ্রে নিজের মায়ের লাশ ফেলে দেওয়ার পর দূর্বলচিত্তের একজন অতি সাধারন তরুণ নাসিরুদ্দিন হয়ে উঠেছিলো নির্ভীক আর সাহসী৷ মায়ের লাশ ফেলে দেয়ার পর যার কিনা ভয় কিংবা আকাঙ্খা সব কিছু হারিয়ে যায় আর তার সাহসও হয়ে উঠে আকাশচুম্বী৷ যে কিনা প্রথমে নিজেকে বাচাঁতে লড়াই করে নিজের মধ্যেই থাকা এক অত্যাচারীর বিরুদ্ধে।
read more...
আর তারপর থেকেই বিভিন্ন অনাচার এর বিরুদ্ধে রুখে দাড়াতে দাড়াতে হয়ে উঠে তার পুরো জাতির নেতা হিসেবে, যার অপেক্ষাতেই হয়তো এতদিন ছিলো জাতি। তারপর নিজ মাতৃভূমি ফিরে পাওয়ার আকাঙ্খা থেকে তারা নিজেরা গড়ে তোলে নিজেদের গেরিলা বাহিনী, যেই বাহিনীর নতুন করে কিছু হারানোর নেই, নেই কোনো পিছুটান। যাদের কিনা আছে নিজের মাতৃভূমিতে ফিরে যাওয়ার তীব্র ইচ্ছাশক্তি। মায়ানমারের দূর্ধর্ষ সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে গড়ে উঠা সেই যুদ্ধে একটা আদর্শ নেতার মতোই নাসিরুদ্দিন ফ্রন্টলাইনে থেকে সাহস জুগিয়েছে সেসব গেরিলা যোদ্ধাদের।
সেই সাথে আছে উল্লেখ্য কিছু চরিত্র। যারা না থাকলে হয়তো নাসিরউদ্দিন নেতা হয়ে উঠতে পারতো না, পারতো না গেরিলা বাহিনী তৈরি করতে। তেমন ২জন চরিত্র মেজর শাফায়াত আর ইমাম সামিউল হাসান। যাদের কথায় নাসিরউদ্দিন ঠিক করে সে লড়বে অন্যায়ের বিরুদ্ধে। সেই সাথে গল্পে উল্লেখিত প্রেসিডেন্ট আব্দুস সালাম এর কথা না বললেই নয়। যে কিনা রোহিঙ্গাদের ভাইয়ের মর্যাদা দিয়ে এদেশে আশ্রয় দেয় এবং তাদের অধিকার, তাদের মাতৃভূমি ফিরিয়ে দিতে অন্যদেশের রাজনৈতিক নেতাদের সাথে লড়ে যায়
আমার মতে, অসম্ভব সুন্দর লিখনি। পড়ার সময় মনে হচ্ছিলো বইয়ের লিখা ঘটনাগুলো চোখের সামনে ভাসছে। পড়তে পড়তে নিজের অজান্তেই একটা সিনেমা বানিয়ে ফেলছিলাম, যে সত্যিই কেমন হতো যদি নাসিরুদ্দিন এর মতো কেউ এখনও জেগে ওঠে নিজের ভূমি, নিজের মাটিতে ফিরে যাওয়ার জন্য, সাথে প্রস্তুত করছে হাজার সহযোগীদের যোদ্ধা বানাতে নিজের মাতৃভূমি, নিজেদের অধিকার ফিরে পেতে। সত্যিই যদি আব্দুস সালাম এর মতো প্রেসিডেন্ট হতো আমাদের দেশে তাহলে দেশের অনেক উন্নতি হতো। দেশের দুর্নীতি কমে যেতো। আমরা আসলেই স্বাধীন মনস্তাত্ত্বিক সত্ত্বা নিয়ে ঘুরতে পারতাম। আর যদি মেজর শাফায়াত এর মতো কেউ থাকতো তাহলে হয়তো মাদকাসক্তির অবক্ষয় ও কমতো আর সন্ত্রাসীরাও। ইমাম সামিউল হাসানের মতো কেউ যদি সত্যিই রোহিঙ্গা ক্যাম্পে থেকে থাকতো তাহলে তারা হয়তো অনেক আগেই ফিরে যেতে পারতো।
সবকিছু মিলিয়ে ফ্রন্টলাইন খুব সিরিয়াস একটা বিষয়বস্তু নিয়ে গড়ে তোলা সাহসী আর সুন্দর একটা গল্প। গল্পের সাথে ধর্ম আর ইসলামের দারুন একটা মেলবন্ধন তৈরী করেছেন লেখক। কিভাবে নিজেদের ইমান ঠিক রেখে লড়াইয়ে জয়ী হওয়া সম্ভব এবং এক্ষেত্রে ইসলাম ধর্মে কি করতে বলা হয়েছে তার ব্যাখ্যা সুনিপুণ ভাবে দেয়া। ঘটনার মাঝে গল্পের প্রেক্ষাপটে ব্যবহৃত কোরআনের আয়াতগুলো মানুষকে ভাবাবে কিছুটা হলেও। যুদ্ধ, স্বাধীনতা, নিষ্পেষন কিংবা অধিকার, এসব বিষয়ের সাথে বৃহত্তর ইসলামের খুব সুন্দর সম্পর্ক দেখিয়েছেন লেখক। চাইলে পড়ে নিতে পারেন বইটি৷ গল্প এবং লেখনি যেমন সুন্দর, তেমনি গল্পে ঘটে যাওয়া কাহিনিগুলো মনে কিছুটা হলেও নাড়া দিবে।
গল্পে মুগ্ধ করা কিছু লাইন-
– মানুষ যা হারায়, ফিরে পায় তার চেয়েও বেশি।
– বিদায়বেলার প্রাকৃতিক এক ভাষা আছে, প্রকৃতির সেই বিদায় সম্ভাষণের নাম নিস্তব্ধতা।
– প্রকৃতির দুটো চাদর আছে, যার একটি কালো অন্যটি সাদা, কালো অন্ধকার আর সাদা কুয়াশা দুটোই ঢেকে রাখে পৃথিবীর ক্ষত।
– পৃথিবীর অন্যান্য রাতের চেয়ে শরণার্থী শিবিরের রাত বড় দীর্ঘ।
– “খুব বেশি সৌন্দর্যের সামনে দাঁড়ালে খুশী হওযার বদলে মানুষের মন খারাপ হয়, কেন জানো?”
“কারণ সে বুঝতে পারে এই সৌন্দর্যের সামনে তার আর বেশিক্ষন থাকা হবে না৷ “read less
পাঠক প্রতিক্রিয়া – ৩
মায়ানমারে রোহিঙ্গাদের উপর চালানো হয় অসহনীয় ও ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ জেনোসাইড ( গণহত্যা ) অনেকে মানুষ তখন হয়েছিলে বাড়ি ঘর ও ভিটে শূন্য। অনেক মানুষ নিজেদের আত্নচিৎকারে নিজেদের পরিচয় ভুলে যাচ্ছিলো। আবার অনেকে পথভ্রান্ত হয়ে অজানা গন্তব্যে ছুটছিলো।
read more...
একটি নৌকা কয়েকমাস যাবত এই বিশত দুনিয়ার জলভাগে ছুটছিলো দিকভ্রান্তের ন্যায়। কেউ নেই তাদের। কেউ তাদের দেখেনা। কেউ তাদের পুছেনা। তারা যেন বিতাড়িত হওয়ার জন্যই দুনিয়ায় প্রেরিত হয়েছিলো।
একবার নিজেদের সেই স্থানে অনুভব করুন। আর একটু অনুধাবন করুন এই দুনিয়া কতটা নির্মম। আর অমায়িক৷ একটা জাতি যখন ৯০% ভঙ্গুর প্রায় অবস্থায় অবস্থানরত। ঠিক সে সময়ে নিজেদের স্বজাতির জুলুমবাজের চাপাকলে তারা হতাশ প্রায়।
তারা এখন কি করবে ?
দাসত্ত্বের দ্বার টেনে যাবে….? গোলামিকে নিজেদেএ অভ্যেসে পরিণত করবে ?
নাকি শক্ত হাতে রুখে দিবে ?
তবে তারা তো দিনের পর দিন যুগের পর যুগ মাজলুম অবস্থায় নিজেদের অবস্থান করাতে করাতে আর দাসত্বের শিকল টানতে টানতে প্রতিবাদ কি ভুলেই গিয়েছিলো! তারা ভুলে গিয়েছিলো রাসূল (সাঃ) এর সেই হাদিস “তোমরা জালিমের হাতকে চেপে ধরো যেন সে জুলুম না করতে পারে”
ঠিক সে সময়ে উজ্জ্বল শ্যামলা বর্ণের একজন যুবকের ( নেতার ) আবির্ভাব ঘটে। যে ইতিমধ্যেই আন্দামান সমুদ্রে নিজের মায়ের লাশ নিজ হাতে নিক্ষেপ করেছে। সেইসাথে সে নিক্ষেপ করেছে তার সমস্ত ইচ্ছা ও মায়া সবকিছু।
অতঃপর সেই সংগ্রামী যুবক উঠে ধারায় ভঙ্গুর অবস্থা থেকে এবং ১৫ নম্বর ক্যাম্পের ই- ব্লকে সে প্রতিষ্ঠিত করে লাঠি বাঁশি সংগ্রামী সংগঠন।
যে দলের ইশারা ছিলো বাঁশি। আর হাতিয়ার ছিলো লাঠি। সেই উজ্জ্বল শ্যামমলা বর্ণের ছেলেটি বাঁশির ফুৎকারের তীব্রতা এতো-ই ছিলো যে সেটি যখন বেজে উঠতো সাথে সাথে বেজে উঠতো হাজারো বাঁশি। যার একটা বাঁশির ফুৎকারে জেগে উঠতো হাজারো ঘুমন্ত যুবক। যার বাঁশির ফুৎকারে ১৫ নম্বর ক্যাম্পের ই-ব্লক থেকে শুরু হওয়া প্রতিবাদী ও অন্যায় অত্যাচার আর অবিচারকে রুখে দেওয়ার দাবানল ধাও ধাও করে জ্বলে উঠেছিলো ১০ লক্ষ রোহিঙ্গাদের অন্তরে।
পরিশেষে আমার মন্তব্য হলো : যতদিন আমরা দাসত্ব আর গোলামিকে নিজেদের দূর্বলতা হিসেবে গ্রহণ করবো ততদিন আমরা দাসত্বের সীমানায় সীমাবদ্ধ। আমাদের মুক্তি নেই। তবে আপনি যেদিন সাহস করে অন্যায়কে রুখে দিতে পারবেন সেদিন আপনি এই বিস্তৃত বিশ্বকে উপলব্ধি করতে পারবেন। নয়তো দাসত্বের সংকীর্ণ সীমানায় সীমিত ভাবে শেষ হয়ে যাবেন৷
আর হ্যাঁ অবশ্যই স্টক খালি হওয়ার আগে বইটি সংগ্রহ করে ফেলুন
বইটির অসাধারণ কিছু লাইন: ১,পৃথিবীতে একা হয়ে যাওয়ার অনেক সুবিধা রয়েছে প্রিয়জনদের কোন দুঃখ-কষ্ট দেখতে হয় না থাকে না কোন বিয়োগ বেদনা।
২,মুসলমানের ঈমান হলো অন্যায়ের কাছে মাথানত না করা৷
৩,পৃথিবীর অন্যান্য রাতগুলি থেকে শরণার্থী শিবিরের রাতগুলো দীর্ঘ হয়।
৪,: জীবন্ত সত্যের সামনে শব্দ যেন অর্থহীন।read less
পাঠক প্রতিক্রিয়া – ৪
(গত বৃহস্পতিবার রাতে শেষ করি বইটি।সারারাত মাথায় ঘুরেছে উই নিড এ হিরো।কে জানতো তারপরের দিন থেকেই আমার প্রার্থনায়,কান্নায়,তামান্নায় উচ্চারিত হবে “উই নিড এ হিরো”!এই অশান্ত সময়ে প্রিয় লেখকের বইটি সবার জন্য প্রেরণার বাতিঘর)
read more...
“আত্মশুদ্ধি না হলে জাতিশুদ্ধি হয় না”।এই আত্মশুদ্ধির জন্যই “উই নিড এ হিরো!”
আন্দামান সমুদ্রে নিজ হাতে মায়ের মৃত দেহ ফেলতে হয়েছিলো তাকে।নীল জলে কালো বোরকায় ঢাকা কাফনে মোড়ানো মায়ের সাথে সাথেই ডুবে গিয়েছিলো তার জাগতিক সব ভয় ও আকাঙ্ক্ষা। মানুষ যা হারায় তার অধিক পায়।সবার অজান্তেই তাকদির তাকে তুলে নিয়েছিলো তার জাতিকে নেতৃত্ব দেয়ার জন্য!
সভ্য মানুষের এই পৃথিবীতে সবার চোখের সামনে ঘটেছে সমসাময়িক কালের সবচেয়ে ভয়ানক আর নৃশংস গণহত্যা আর জাতি উচ্ছেদ।জাতীয়তাবাদী ঘৃণা উসকে দিয়ে শুধু ধর্মীয় পরিচয়ের কারনে একটা জাতি হারিয়ে যায় কালের বিবর্তনে।এখন তাদের নাম রিফিউজি! ভয় এবং সাহস দুটিই বড় সংক্রামক চরিত্র।প্রতিরোধহীন নির্যাতন পেতে পেতে এই জাতি থেকে সাহস হারিয়ে গেছে।
কয়লা থেকে রত্ন তুলে আনার মতো করেই এই আশাহতদের মাঝেই একজন নেতাকে খুঁজে ফিরেন মেজর শাফায়াত।দিনের পর দিন হাজারো ভাগ্যহতাদের দুখ যাতনার ভার বহন করছে প্রকৃতি।কিন্তু ভাগ্য নির্মাতা রুপে সত্যিকারের ঝাণ্ডাবাহী বীর কয়টা জাতীইই বা পায়।তবুও মেজর শাফায়াত স্বপ্নের তাবির খুঁজেন। হেলে পরা প্রাচীর মেরামতে একজন সিংহ হৃদয় খুঁজেন ।এবং সবশেষে সেই নেতা তিনি পেয়েছেন।নাসিরুদ্দিন!একজন বিশ্বাসী আত্মার মুসলমান।সত্যিকারের হিরো।
ভেঙে পরা সাহসে ঈমানের প্রদীপ জ্বেলে এই সাহসীরা অবশেষে পৌঁছে গিয়েছিলো তাদের কাঙ্ক্ষিত ফ্রন্টলাইনে..
দীর্ঘ এক বছর অপেক্ষায় ছিলাম ফ্রন্টলাইনের জন্য।ভাবতেও পারিনি লেখক তার চিন্তাশক্তির প্রসার ঘটিয়ে এমন একটা ফ্রন্টলাইন সৃষ্টি করবেন।এখন বিশ্বময় নিপীড়িত হৃদয়ের কান্না।শরণার্থী শিবির ছড়িয়ে আছে ইতিহাসের কান্না বুকে নিয়ে জনপদ থেকে জনপদ। কোন নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠী না শুধু আমরাও প্রবলভাবে চাইছি একজন নেতা আসুক।আবার ফিরে যাই সেই সোনালি যুগে।যেখানে যেকোন অবস্থায় ইনসাফ কায়েম হবে।যতক্ষন পড়েছি এক মূহুর্তের জন্যও ভাবতে ইচ্ছা করেনি এটা কল্পনার ফ্রন্টলাইন। ফ্রন্টলাইন চমৎকার একটা চিন্তাশক্তির ফল।লেখকের শুদ্ধতম বিশ্বাস যে কোন মানুষের অন্তরে চিন্তার খোরাক যোগাবে।একজন ইমাম অন্তরের চোখ খুলে দিয়ে মানুষকে অনন্য উপমায় রুপান্তিত করতে পারেন।এই পবিত্রতম বিশ্বাস কে শ্রদ্ধা জানাই।বইয়ের ইমাম নেতা সামিউলের জন্য আমার হৃদয় কেঁদে উঠেছিলো সব শেষে!
গল্পের জাদুতে আটকে রেখে কোরআনের বাণী হাদিসের দরস তার বইগুলোতে ভিন্ন শীল্প যোগ করে।মোহময়ী করে তুলে উপাখ্যান।
বই পড়তে পড়তে আটকে যাওয়া বাক্যে কোটেশন করে রাখা আমার একটা আলাদা অভ্যাস।পড়া শেষে দেখি সারা বই জুড়েই দাগ দেয়া।কোন বাক্যের কথা আলাদা করে বলি!
যে বাক্যগুলো হৃদয়ে গেঁথে আছে:
*মানুষ যা হারায় তার চেয়ে অধিক ফিরে পায়!
*আত্মশুদ্ধি না হলে জাতিশুদ্ধতা পায় না।
*পৃথিবীর দুটি চাদর আছে।একটি কালো একটি সাদা, কালো অন্ধকার সাদা কুয়াশা।দুটিইই ঢেকে রাখে পৃথিবীর ক্ষত।
*গভীর বিশ্বাসী মানুষের প্রার্থনার শক্তি প্রবল!যা অন্যকে সহজেই স্পর্শ করে।
*খুব বেশি সৌন্দর্যের সামনে দাঁড়ালে খুশি হওয়ার বদলে মানুষের মন খারাপ হয়,কারন সে বুজতে পারে এই সৌন্দর্যের সামনে তার আর বেশিক্ষণ থাকা হবে না।read less
পাঠক প্রতিক্রিয়া – ৫
দারবিশ, দখল, আসমান পড়ার পর থেকেই প্রতিবছর বইমেলার বুকলিস্টের প্রথমে থাকে লতিফুল ইসলাম শিবলী ভাইয়ের বই। সেই প্রথা অনুযায়ী এবারের বইমেলার প্রথম সংগ্রহ লেখকের অটোগ্রাফসহ “ফ্রন্টলাইন। প্রথম সুযোগেই বইটি পড়ে ফেলেছি। কিন্তু ব্যস্ততার কারণে রিভিউ লেখা হয়নি।
read more...
প্রথমেই বলি বইয়ের মূলবিষয় নিয়ে। এ বিষয়ে এধরনের উপন্যাস বোধহয় এই প্রথম। প্রতিবারই আমি তাজ্জব হয়ে যাই লেখক এত প্রচলিত অথচ অনন্য বিষয় কীভাবে খুঁজে পান! সাধারণ ও অসাধারণ দুইয়ের মিশেলে কখনোই বলা হয়নি বা ভাবা হয়নি এমন এক পটভূমি ফ্রন্টলাইনের।
বইয়ের কয়েকজন প্রধান চরিত্রের মধ্যে আমার ভালো লেগে যায় মেজর শাফায়াতকে। এদেশের কিছু লোক যখন আমাদের দেশিয় হিরো কিংবদন্তী মাসুদ রানাকে নিয়ে ছিনিমিনি খেলা শুরু করেছে তখন এমন একটি চরিত্র চোখে পড়ার মতো। লেখক এই মেজরকে নিয়ে একটা সিরিজ লিখলে ভালো হবে।
লেখকের ভেতরে সবসময়ই একজন কবি থাকেন সেটা বোঝা যায় বইয়ের কিছু অসাধারণ লাইনে। যেমন – “প্রকৃতির দুটো চাদর আছে, যার একটি কালো অন্যটি সাদা, কালো অন্ধকার আর সাদা কুয়াশা দুটোই ঢেকে রাখে পৃথিবীর ক্ষত।”
কিছু কিছু জিনিস আমার খুব বেশি বাড়াবাড়ি মনে হয়েছে, সেটা না করে অন্যদিকে ফোকাস করলে বোধহয় ভালো হতো। তবে বইটি বেশ তথ্যবহুল। একটা বই ভালো হোক মন্দ হোক সেই বই থেকে যদি আপনি দুইলাইন শিখতে না পারেন তাহলে সেই বইয়ের দুই ছটাক মূল্য নেই বলে আমি মনে করি। তবে উপন্যাসের বাস্তবধর্মী ক্লাইমেক্স আমার ভালো লেগেছে।read less
পাঠক প্রতিক্রিয়া – ৬
পরিচিত সবাই যেমন জানে আমি যথেষ্ট বান্দর একটা মেয়ে তেমন প্রায় সবাই জানে আমি খুব সহজে ডিপ্রেশনে চলে যাই, আমার এই স্বভাবের জন্য অনেকে আমারে পাগল ও বলে। তো লাস্ট অক্টোবরে যখন আব্বু সিদ্ধান্ত নিলো নারায়ণগঞ্জ থেকে একবারে পাবনা চলে আসবে, তখন আমার মাথা খারাপ হয়ে গেছিল।
read more...
পাবনা আমার জন্মভূমি হলেও জন্মসূত্রেই পাবনার প্রতি আমার বিরক্তির শেষ নেই, সেই পাবনাতে একবারে চলে আসা আর নরকে যাওয়া এক মনে হচ্ছিল, সুইসাইড করার চিন্তাও মাথায় আসছিল, তখন হাতে আসে “আসমান” বইটা, প্রচন্ড বিরক্ত থাকা স্বত্তেও অনেকটা জোর করে বইটা পড়া শুরু করি মাথা থেকে সব চিন্তা ঝেড়ে ফেলার জন্য, তখন “আসমান” সম্পর্কে আমার বিন্দু মাত্র ধারণা ছিল না কিন্তু পড়া শুরু করতে বইটা জাস্ট ম্যাজিকের মতো কাজ করে গেছে, আমার আউলাঝাউলা মাথাটা আস্তে আস্তে ঠান্ডা হয়ে গেলো, পরিস্থিতি মেনে নিতে প্রস্তুত হয়ে গেলো…
কয়দিন আগে হাতে আসছে ফ্রন্টলাইন কিন্তু পড়তে ইচ্ছে করে নাই, প্রচুর মন খারাপ ছিল কারণ টা অনেকেই জানে না জানার ই কি আছে সারাক্ষণ যে ভাবে খবিশ টারে নিয়ে পোস্ট করি, সে যাই হোক আইডি অফ করে দিছিলাম চিন্তা ছিল কারো সাথে যোগাযোগ রাখবো না, সবার লাইফে এত এত উন্নতি আমার লাইফ শূন্য না ঠিক শূন্য না তার থেকেও খারাপ। তো আজকে সকালে ফ্রন্টলাইন নিয়ে বসলাম, প্রথম যে লাইন টা চোখে পড়লো “মানুষ যা হারায় ফিরে পায় তার থেকেও বেশি”, তারপরে রোহিঙ্গা ছেলেটা তার মায়ের লাশ সমুদ্রে ফেলে দিয়ে অসহায় না হয়ে নেতৃত্ব দিয়ে শিখছে, এই কথা গুলা মন ভালো করে দিলো, বিকেলে অনলাইন আসলাম।
আরেকটা কথা না বললেই না, বিকালে অনলাইন আসার পরে খেয়াল করলাম অনেকেই বলতেছে ” ইসলাম আর সাহিত্য উপন্যাস এক সাথে যায় না” আপনাদের বলছি সময় করে “আসমান ” ফ্রন্টলাইন ” বই দুইটা পড়ে দেখবেন।
সত্যি বলতে আসমান আর ফ্রন্টলাইন না পড়লে আমার নিজের ও বিশ্বাস হতো না ধর্মের কথা সাথে রেখেও এত ভালো কিছু লেখা যায়।
লাতিফুল ইসলাম শিবলী ভাইয়াকে বলতে ইচ্ছে করে “ভাইয়া আপনার হাতে জাদু আছে, যে জাদু রূপকথার দেশে নিয়ে যায় না বরং বাস্তবতাকে সুন্দর ভাবে মেনে নিতে শেখায়”
[কেউ আবার বইলেন না রাকাপু সেলেব্রিটি লেখকের বই পড়ে তার তেল দিয়ে নিজেও সেলেব্রিটি হতে চাচ্ছে, ওই স্বভাব রাকার নাই]read less
পাঠক প্রতিক্রিয়া – ৭
ফ্রন্ট লাইন পড়তে গিয়ে মনে হচ্ছিল আসমানের সেই ইমাম সাহেব এবার নতুনরূপে প্রত্যাবর্তন করেছেন। আসমানের ছায়া থাকলেও গল্প একেবারে ভিন্ন।
read more...
পৃথিবীটা আজ এক অমোঘ অন্ধকারের দিকে এগিয়ে চলছে এবং প্রতিটি জীব তার সমস্ত শক্তি দিয়ে প্রার্থনা করছে এমন কেউ আসুক যে তাদের এই বিপর্যস্ত জীবন থেকে মুক্তি দিয়ে এক অন্তহীন আলোর দিকে নিয়ে যাবে।
চাওয়া সবার এক হলেও এই পরিবর্তনে আমাকেও শামিল হতে হবে এই প্রক্রিয়ার আমরা আবার রাজি নই। আমরা শুধু একজন ত্রাণকর্তা চাই, কিন্তু নিজের ঘাড়ে দায়িত্ব নিতে আমরা এক পাও এগিয়ে আসি না। শিবলী ভাই অতি চমৎকারভাবে মানুষের এই দ্বিধা, এই নিজেকে আড়াল করে ছায়া করে রাখার চেষ্টা কে এই উপন্যাসে চমৎকারভাবে তুলে ধরেছেন।
নাসিরউদ্দিন শুধু একটি চরিত্র নয় যেন নিজেই এক আলোকবর্তিকা, সাধারণের অসাধারণ হওয়ার গল্প। নেতৃত্ব গুন এমনিতে আসে না আবার জন্মের সাথে সাথে সে ডিএনএ তে বহন করে না। এটি একটি আত্মবিশ্বাসী প্রক্রিয়া যেটি ঘটনার প্রবাহে তৈরি হয়। ইতিহাস সবসময় এই সত্যটা প্রমাণ করেছে কিন্তু অবুঝ এবং উট পাখি হয়ে থাকা মানুষ সারা জীবন এটিকে অস্বীকার করেছে। তার এই উপন্যাসে পড়ে মনে পড়ে ইসলামের শুরুতে সাহাবীরা কিভাবে সর্বকালের সেরা নেতাদের অন্তর্ভুক্ত হয়েছিলেন অথচ তারা ছিলেন সাধারণ পরিবারের এমনকি তাদের বংশের কেউ নেতা ছিল না কখনো। শুধু একটি সঠিক আদর্শ এবং সেটাকে আকড়ে ধরার বিরল মনোভাব তাদের শুধু রাজ্য দেয়নি বরং সারাজীবন বিশ্বের মানুষের কাছে অনুকরণীয় করে রেখেছে।
বর্তমান এই অরাজকতার যেখানে পরিবর্তনের স্বপ্ন তো দূরে থাক শ্বাস নেয়াই কষ্টকর হয়ে উঠেছে, এই উপন্যাস প্রত্যেক পরিবর্তনকামী মানুষের জন্য এক অনুসরণীয় মডেল হয়ে থাকবে।
ইমাম সামিউল হাসান এর তেজদ্দিপ্ত ব্যক্তিত্ব আর প্রেরনামূলক বক্তব্য প্রমাণ করে শুধু একটি নেতৃত্ব গুন কখনই পরিবর্তন আনতে পারে না তার সাথে প্রয়োজন অনবরত ইবাদতের মধ্য থাকা, শুদ্ধির মধ্যে থাকা। কিন্তু আফসোস আজ আমরা ইউটিউব এবং সোস্যাল মিডিয়াতে শুধু ওয়াজকারী আলেম দেখি কিন্তু মানুষের বিশ্বাস এবং আত্মবিশ্বাস ধারণ করে পরিবর্তনের সূচনা করবে, পরিপূর্ণ শাসন ব্যবস্থার কথা বলবে এরকম কিছু খুঁজে পাই না। এই উপন্যাস তাদের জন্য একটি সবক হতে পারে যাতে তারা অনুধাবন করতে পারে কেমন হতে হবে একজন ইমামকে। মেজর সাফায়েত, জয়নাল, নসু, মাঝি যেন এই সমাজের এই সময়ের প্রতিনিধি। মেজর সাফায়েত এর মতো একশত মেজর থাকলেই এই দেশ আজ অন্যরূপে থাকতো।
অসাধারণ গল্প এগিয়ে চলেছে শিবলী ভাইয়ের নিপুণ কলমের আঁচড় এ, এখানে যে রকম আবেগ আছে, উত্তেজনা আছে ঠিক একইভাবে নিজেদের অক্ষমতাও আছে। পাঠক পড়তে পড়তে এক সময় নিজেই এক চরিত্রের অনুসারী হয়ে পুরো উপন্যাস বিচরণ করবে।
চমতকার এই উপন্যাসে কিছু আক্ষেপও আছে। রোহিঙ্গাদের দুর্দশাগুলো আর একটু ফোটানো যেত, কারণ এই সুশীল সমাজ জানে না তাদের অবর্ণনীয় কষ্টের কথা, নিজের ভূমি হারানোর যন্ত্রণার কথা। তারা শুধু মিডিয়া দ্বারা তৈরী তাদের অপরাধ এবং অরাজকতা দেখে কিন্তু তাদের ভিতরের দীর্ঘশ্বাস আর হা হা কার চোখে পড়ে না। যুদ্ধের বর্ণনা গুলো আরও ধীর্ঘ হতে পারতো, শেষে মনে হচ্ছিল হটাৎ করে তড়িঘড়ি করে শেষ করা হয়েছে। কমপক্ষে তিনশত পেজের একটা বই হলে আরও কয়েক ঘন্টা উত্তেজনা আর চমকের মাঝে বিচরণ করতে পারতাম।
পরিশেষে বলতে পারি শুদ্ধ কথা না বলতে পারার এই সময়ে এ রকম উপন্যাস শুধু শিবলী ভাই লিখতে পারেন। জানি না আমাদের পক্ষপাতদুষ্ট মিডিয়া না আবার অন্য খাতে এটি বহমান করে।read less
পাঠক প্রতিক্রিয়া – ৮
“ফ্রন্টলাইন” নিয়ে বেশি কিছু বলবো না,আমি রিভিউ লিখতে পারি না।
শুধু এতটুকু বলতে পারি
read more...
যারা আসমান পড়েছেন, আসমানের ইমাম সাহেবের মতো একটা ইমাম সাহেব কে পাবেন, যেমন ইমাম সাহেব সত্যিই আমাদের দরকার বর্তমান যুব সমাজের জন্য।
রোহিঙ্গাদের অসহায় জীবন যাপনের বিষয় গুলো আমারর হৃদয়কে কেন জানি খুব বেশি স্পর্শ করে নি, আমি বরাবর তাদের বোঝা মনে করতাম।
তবে “ফ্রন্টলাইন” আমার ধারনা বদলে দিয়েছে। আমি ভুলে গিয়েছিলাম মানুষ গুলো আমার ভাই, তারাও মুসলমান। লেখক শিবলী যে বরাবরই ইনসাফের জন্য লেখে, সেইটার আরো একটা বড় উদাহরন।
সেই সাথে সামপ্রতিক কিছু বিষয়ের সাথে মিলে যাবে
ফ্রন্টলাইনে প্রেক্ষাপট,
সবকিছুর মাঝে আমার সবচেয়ে ভালো লেগেছে-
ফ্রন্টলাইন এর রাষ্টপতির চরিত্রটা। এই বাংলার রাষ্ট্র প্রধানের তো এমনই হওয়া উচিত।
তবে পড়ারর সময় আমি ভুলেই গেছিলাম, এইটা কাল্পনিক।
এমন একজন দেশ প্রধান থাকলে, ভূ রাজনীতীর চিত্রটা একদমই অন্য হতে পারতো।
তবে এই বিস্বাসও করেছি পরে, মানুষ যা কল্পনা করে তার বাস্তবায়ন করার ক্ষমতাও আল্লাহ দিয়েছে,ইনশাআল্লাহ শুধু সময়ের অপেক্ষা।
আমি স্কুল জীবনে খুব ভালোভাবেই ধর্মীয় নিয়ম কানুন মেনে চলার চেষ্টা করতাম।
তবে কলেজ জীবনে এসে অনেকটা ধর্ম বিমুখ মানুষ হয়ে যায়, সহজ ভাবে বলতে গেলে মডারেট মুসলিমের মতো বা তার চেয়ে একটু খারাপ।
তবে আল্লাহর রহমতে আমার আমি ধর্মের দিকে ফিরে আসতে পেরেছিলাম খুব দ্রুতই।
কারন আমি নিজে ধর্ম ঠিক ভাবে পালন না করলেও,
আমার ধর্মকে কেউ কিছু বলবে এটা কখনো মেনে নিতে পারতাম না।
যখন প্রকটিসিং মুসলমান ছিলাম না তখন
বাংলাদেশি অনেক লেখকের উপন্যাস আমি পড়েছি এই সময়টার মধ্য। অনেক বড় বড় লেখক তারা, নাম নিবো না তাদের, তবে তাদের লেখা পড়তাম একটা মাত্র কারনেই, খুব ভালো করে প্রেম শেখার জন্য, রোমান্টিক হওয়ার জন্য।
কিন্তুু ধর্মের পথে ফিরে আসার পর স্বাভাবিক ভাবেই বিবেক সম্মতি দিচ্ছিলো না আমাকে ওই সব লেখকদের লেখা পড়ার জন্য।
আমি খুজছিলাম বাঙ্গালি লেখক, যারর লেখার মধ্য তিনি আমার ধর্মের মাধুর্য ও বিসালতা ফুটিয়ে তুলবে।
আসমানের মাঝে আমি সেই ফিলটা পাই।
শিবলী ভাইয়ার “প্যারিসের চিঠি” কবিতা পড়ার পরথেকেই তার ফ্যান ছিলাম।
২০১৯ এর বইমোলতে পাবলিশ হলো তার নতুন উপন্যাস” আসমান”।
“আসমান” পড়েছি এক বসাতেই, এরকম এর আগে কখনো এক বসাতেই কোন উপন্যাস শেষ করি নি আমি।
শুধু নিজে পড়ে খান্ত হইনি, আমার কাছের সব বন্ধুকে জোর করে পড়িয়েছি, যারা পড়তে অনিচ্ছা প্রকাশ করেছে তাদের পড়ে শুনিয়েছি।
আমার আজকের পরিবর্তনের জন্য একটা বিশাল ভূমিকা রেখেছিলো “আসমান”
সবাই তো ‘আসমান’, ‘ফ্রন্টলাইনের” ইমাম সাহেবের ফ্যান হয়ে গেছেন,এর মাঝে কিন্তুু আমার ইমাম সাহেব কে বাস্তবে পেয়ে গেছি।
হ্যা আমার একজন ইমাম সাহেব হলেন- লতিফুল ইসলাম শিবলী ও তার লেখা গুলো।read less
পাঠক প্রতিক্রিয়া – ৯
শত শত বছরের নির্মম নির্যাতনের জীবন্ত উদাহরন মিয়ানমারের আরাকান প্রদেশ থেকে বাংলাদেশে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী। সমসাময়িক ইতিহাসের জাতিনিধনের স্বীকার এই রোহিঙ্গাদের নিয়ে সম্পূর্ণ কাল্পনিক এক ঘটনাকে কেন্দ্র করেই লতিফুল ইসলাম শিবলীর এবারের সৃষ্টি ‘ফ্রন্টলাইন’।
read more...
সমুদ্র হতে সমুদ্রে ঠিকানাহীন, গন্তব্যহীন ছুটে চলা এক রোহিঙ্গা দলের হাহাকার, সেই দলের নাসিরউদ্দিন নামে এক যুবকের অকালে মা-হারানো এবং মায়ের কবর দিতে না পারার ব্যার্থতার আত্মচিৎকার দেয় ফ্রন্টলাইনের সূচনা। সেই দলটি ঠায় পায় বাংলাদেশে এবং লেখকের কল্পনাশক্তির শৈল্পিক ছোয়ায় ধীরে-ধীরে লাঠি-বাশি বাহিনী হতে লোমহর্ষক ঘটনা থেকে ঘটনার আড়ালে তারা নিজেরাই নিজেদের যুদ্ধ করার যোদ্ধাবাহিনী গড়ে তুলে পুরা উপন্যাস জুরে।
নেতৃত্ব সৃষ্টি হয় সময়ের প্রয়োজনে, জীবনের কারনে। নেতৃত্ব কখনও বলে-কয়ে আসেনা, নেতাও কখনও কেউ চেয়ে হতে পারেনা। লেখকের ভাষায়, “নেতা হওয়ার প্রথম অযোগ্যতাই হচ্ছে নেতা হতে চাওয়া।” চেয়ে নয় বরং ঘটনার কারনেই, মুক্তির প্রবল আকাঙ্খা থেকেই ১০-নম্বর ক্যাম্পের নাসিরউদ্দিন নামক যুবকটি হয়ে উঠে রোহিঙ্গা দলের নেতা। নাসিরউদ্দিন যদি হয় স্ট্র্যাটেজিক নেতা, গল্পের ইমাম সামিউল হাসান হয়ে উঠে অধ্যাত্মিকত নেতা যাদের সমন্বিত নেতৃত্বে, মেজর শাফায়াতের পরোক্ষ সহযোগিতায় সংগঠিত হয় ‘ফ্রন্টলাইন’-এর কাল্পনিক যুদ্ধ।
লেখকের সবগুলো উপন্যাসের ঘটনাগুলো একটার থেকে আরেকটা আলাদা, পাঠক হিসেবে একঘেয়েমি লাগার নয়। ইতিহাসের নানা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে অত্যন্ত সাবলীলভাবে পাঠকের সামনে তুলে ধরার ক্ষমতা, অধ্যাত্মিকতার ভেলায় পাঠককে ভাসিয়ে নতুনভাবে ভাবিয়ে তুলার প্রয়াস শিবলী ভাইয়ের মধ্যে যে শক্তভাবে বিদ্যমান–এবারের ফ্রন্টলাইন নিশ্চিৎভাবে তার প্রমান। অনেকদিন আগে ভাইয়ের কাছ থেকে শুনেছিলাম ফ্রন্টলাইন হবে রোহিঙ্গাদের নিয়ে আর বইটি হাতে পাবার আগ-পর্যন্ত চিন্তা করছিলাম রোহিঙ্গাদের নিয়ে আবার কি গল্প হতে পারে।
‘দারবিশ’, ‘দখল’, ‘আসমান’, ‘রাখাল’-এর মতো এবারের ‘ফ্রন্টলাইন’-ও পাঠককে বুঝাবে নিরস বিষয়কে লেখক তার পান্ডিত্যেরর মাধ্যমে কিভাবে সরস করে তুলতে পারে, একটি ঘটনাকে কিভাবে নতুনভাবে চিন্তা করতে শিখাতে পারে। গোয়েন্দা কাহিনীর মাঝে ধর্মীয় জ্ঞান, ভূ-রাজনৈতিক দর্শন আর কাব্যিক ছন্দময় নানা লাইনের মিশ্রণ পাঠককে মগ্ন রাখতে পরিপূর্ণ স্বার্থক শিবলী ভাইয়ের অনিন্দ্য সুন্দর এই ফ্রন্টলাইন।read less
পাঠক প্রতিক্রিয়া – ১০
আন্দামান সমুদ্রে নিজ হাতে মায়ের মৃতদেহ ছুঁড়ে ফেলতে হয়েছিল নাসিরউদ্দিনের কিন্তু কেন???
উখিয়া এবং টেকনাফের প্রায় পঞ্চাশ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ছড়ানো বত্রিশ টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বাস করছে প্রায় বারো লক্ষ রোহিঙ্গা ।এই পুরো রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাঁচটা সন্ত্রাসী গ্রুপ সক্রিয় আছে, যারা চাঁদাবাজি, ডাকাতি, মাদক ব্যবসা, মুক্তিপণ আদায় সহ এমন কোনো অপকর্ম নেই যা করেনা।
read more...
দশ নাম্বার ক্যাম্পে চাঁদাবাজি করতো নশু বাহিনী। কুতুপালংয়ের দশ নাম্বার ক্যাম্পে ই ব্লগের ছোট ছাপরা মসজিদ টা বানানো হয়েছে টিলার উপরে, মসজিদের এক কোণে মাথা ঢেকে গভীর ধ্যানে বসে ছিলেন মেজর শাফায়েত। মসজিদ খালি হওয়ার পর মেজর শাফায়েত মসজিদের ইমাম সামিউল হাসানের সামনে বসে ফিসফিস করে বলে উঠলোঃ
#উই_নিড_এ_হিরো
তারা হিরো হিসেবে বেছে নিল নাসিরউদ্দিনকে কারণ টলার থেকে যেদিন নিজ হাতে মায়ের লাশ তুলে ফেলেছিল সেদিন সেই লাশের সাথে ভয় আর মায়া দুটোকে আন্দামান সমুদ্রে ফেলে দিয়ে এসেছিল নাসিরউদ্দিন।নশু বাহিনীর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ালো এই নাসিরউদ্দিন। নাসিরউদ্দিন একটি সন্ত্রাস প্রতিরোধ কমিটি তৈরি করল তার নাম লাঠি-বাঁশি সংগ্রাম কমিটি। রাত তিন টা পনেরো , নশুর লোকজন পুরো দশ নাম্বার ক্যাম্প ঘেরাও করে ফেলছে,বারো’শ সাতাশ নাম্বার ঘরে শুয়ে আছে নাসিরউদ্দিন।নশু তার পুরো বাহিনী নিয়ে বারা’শ সাতাশ নাম্বার ঘরের সামনে অপেক্ষা করছে,নাসিরউদ্দিন ঘর থেকে বেরিয়ে আসলো, নশু বাহিনীর হাতে একে 47 রাইফেল। মুখোমুখি ওরা, নাসিরউদ্দিন নশুকে অবাক করে দিয়ে বলে উঠলো আমি তোর অপেক্ষায় বসে ছিলাম…… কি হলো তারপর জানতে হলে পড়তে হবে ফ্রন্টলাইন।
গল্পটা শুরু এখান থেকেই….
” গল্পটা এক সাধারন মানুষ থেকে অসাধারণ হওয়ার গল্প। গল্পটা মরে মরে বেঁচে থাকা মানুষের গল্প। গল্পটা এক জাতির অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার লড়াই এর গল্প । গল্পটা একটা ভঙ্গুর প্রায় অসহায় জাতীর নিজ ভূমি হারিয়ে শরনার্থী হয়ে মানবতার জীবন যাপনের গল্প। গল্পটা সেই জাতির মাঝে একটা নতুন নেতার জন্ম নেওয়ার। গল্পটা দগ্ধ ক্ষতের মাঝে নতুন কোনো আশার আলো জন্ম নেওয়ার। গল্পটা একটা নতুন বাহিনী তৈরী হওয়ার যাদের নতুন করে আর কিছুই হারানোর নেই৷”
পাঠ প্রতিক্রিয়াঃলেখক তাঁর সুন্দর লিখনিতে তুলে ধরেছেন কিভাবে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান করা যেতে পারে।আমাদের দেশে এমন একটি সৎ ও নিষ্ঠাবান প্রেসিডেন্ট প্রয়োজন। একজন সৎ রাষ্ট্রনায়ক কিভাবে তার রাষ্ট্রকে উচ্চ শিখরে নিয়ে যেতে পারেন সেটা তুলে ধরেছেন। আমাদের দরকার একজন নাসিরউদ্দিন।আমাদের দরকার একজন আধ্যাত্মিক গুরু সামিউল হাসান এর মত।মন থেকে চাই আমাদের প্রেসিডেন্ট যেন ফ্রন্টলাইন এ প্রেসিডেন্ট আব্দুল সালাম এর মত হয়।রোহিঙ্গা সম্পর্কে আমারও খুব বাজে ধারণা ছিল, আমরা তাদের থাকতে দিচ্ছি আর তারাই আমাদের দেশে মাদক সাপ্লাই করছে, এসব ধারণা পরিবর্তন হয়ে গেছে ফন্টলাইনের জন্য। তাদের জন্য গভীর ভালবাসার জন্ম নিয়েছে। একটা জাতি কতটা নিপীড়িত-নির্যাতিত হয়েও এখনো টিকে আছে।read less