যতক্ষণ তুমি ইনসাফের পক্ষে
ততক্ষণই তুমি মানুষ,
যতক্ষণ তুমি ইনসাফের পক্ষে-
ততক্ষণই তুমি গ্রহ গ্রহান্তরের,
তোমার কোন দেশ নেই, কাল নেই, তুমি কালোত্তীর্ণ
তোমাকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত হচ্ছে- মহা জাগতিক ঘুর্ণন
যেন তুমিই মহাজাগতিক কা’বা।
যতক্ষণ তুমি ইনসাফের পক্ষে ততক্ষণই তুমি ফিলিস্তিনের সেই শিশু
যে ইজরাইলী ট্যাঙ্কের দিকে সর্বশক্তি দিয়ে ছুড়ে মারছে ঢিল,
আর তুমিই ছিলে তিয়ানানমেনে সারিবদ্ধ উদ্ধত ট্যাঙ্কের সামনে দাঁড়ানো রহস্য পুরুষ,
পার্থিব মানুষ তোমার পরিচয় না জানলেও
আমি ঘোষণা দিচ্ছি তোমার নাম-
তুমিই ছিলে ইনসাফ।
যতক্ষণ তুমি ইনসাফের পক্ষে ছিলে
আমি তোমাকে সাউথ ভিয়েতনামের জঙ্গল ফুঁড়ে বেরিয়ে আসতে দেখেছি সায়গনের দিকে,
আর তোমার ভয়ে দুতাবাসের ছাদের উপর থরথর কাঁপছিল পলায়নরত
মার্কিন হেলিকপ্টার।
হে ইনসাফ-
আমি তোমাকে চিনি
তুমিই সেই পাঞ্জসির উপত্যাকার সিংহ
কাবুল কান্দাহারের চিতা,
পরাজিত ঘরে ফেরা শেষ রুশ যোদ্ধার রাইফেলের নলে তুমি গুজে দিয়েছিলে পারস্যের গোলাপ।
হিন্দুকুশ পর্বত চুড়ার শুভ্র বরফের শিরস্ত্রাণে প্রতিফলিত সূর্য
তোমাকেই সকাল বিকেল করে কুর্নিস।
তোমার আস্তিন গোটান বলিষ্ট হাতের হাতুরি শাবল ভাঙ্গছিল বার্লিনের দেয়াল,
রেসকোর্সের তর্জনী তোলা হাত তোমার
কালুর ঘাটের বিদ্রোহী কণ্ঠস্বর তোমার
স্তালিনগ্রাদের লাল পতাকা উড্ডীন ছিল তোমারই হাতে।
তুমি আরাকানের ধান ক্ষেতের আইল ধরে হেটে যাচ্ছ,
ল্যন্ডমাইনে ক্ষত বিক্ষত তোমার পা,
যে পায়ের ছোপ ছোপ দাগে তৈরি হচ্ছে কাশ্মীরের স্বাধীনতার পতাকা।
হে ইনসাফ, আমি তোমাকে চিনি।
তুমি গাজা ওয়েস্ট ব্যাঙ্কের জলপাই বনের দোয়েল
অনবরত গাইছো- ইন্তেফাদা ইন্তেফাদা ইন্তেফাদা।
এই জুলুমের পৃথিবীতে
তুমি যতই মানুষের মত দেখতে হও না কেন,
শুধু যতক্ষণ তুমি ইনসাফের পক্ষে
শুধু ততক্ষণই তুমি মানুষ।