উপন্যাস
লেখক: লতিফুল ইসলাম শিবলী
প্রকাশ: ফেব্রুয়ারি ২০১৮
ভালোবাসার জন্য এক কোমল হৃদয় প্রেমিক হয়েছিল খুনি, আর এক নিষ্ঠুর খুনি হয়েছিল ক্ষমাশীল। একটা হৃদয় দখলের জন্য দুই প্রেমিকের এই যুদ্ধটা ছড়িয়ে পড়েছিল সারা শহরে। শহরটার নাম ঢাকা, যে শহরকে আমরা চিনি না। এই শহরেই আছে আন্ডারওয়ার্ল্ড নামের অচেনা মানুষদের এক অন্ধকার পৃথিবী। রাষ্ট্রের মতো এদেরও আছে নাগরিকদের উপর গোপন নিয়ন্ত্রণ, আর ক্ষমতার পালাবদল। অন্ধকার ঢাকার অর্গানাইজড ক্রিমিনালদের ক্ষমতা দখলের রক্ত হিম করা গোপন যুদ্ধের সাথে এবার জড়িয়ে গেছে হৃদয় দখলের যুদ্ধটা।
পাঠক প্রতিক্রিয়া
পাঠক প্রতিক্রিয়া –
প্রিয় Latiful Islam Shibli
ভাইয়া
নিজের অজান্তেই কেন জানি ভয় হচ্ছে..!! কারণ, আজকে আমি এমন একজন মানুষের লেখা বই নিয়ে রিভিউ লিখছি বা মন্তব্য করছি, আমি বা আমার মতো অনেকেই আপনার লেখা গান শুনে শুনে বড় হয়েছি!! বলতেই পারি … আপনার লেখা গান শুনেই কষ্টের মাঝে হাসতে শিখেছি এবং চিৎকার করে বলতে শিখেছি “হাসতে দেখো, গাইতে দেখো………!!” আবার প্রেমিকাকে বলতে শিখেছি “তুমি আমার প্রথম সকাল” ….!! হারিয়ে যাওয়া কাউকে এও বলতে শিখেছি… সেই তুমি কেন এতো অচেনা হলে ……. এবং জেনেছি মান্নান মিয়ার তিতাস মলমে সেই হৃদয়ের ক্ষত মুছে ফেলা যায় …!! এরকম আরো অনেক কিছু …… তাই ভয় হচ্ছে কি লিখতে কি লিখে ফেলি …!!
যাইহোক, আপনার “দখল” উপন্যাস পড়ে যদি একটি বাক্যে আমাকে মন্তব্য করতে বলা হয় ! আমি বলবো, গতকাল “দখল” নামক রামগোপাল বার্মার একটি নতুন মুভি দেখলাম..!! কারণ “রামগোপাল বার্মা” তার হিরো কে দিয়ে এমন ভাবে ক্রাইমকে দেখায়, ক্রাইম কেও সঠিক বলে মনে হয়..!! কারণ সে দেশের জন্য বা সমাজের জন্য বা তার পরিবারের জন্য ক্রাইম করতে বাধ্য হয়..!! আপনি ঠিক সেই ভাবেই চেষ্টা করেছেন ডেভিড কে দিয়ে…!! আমি যখন রামগোপাল বার্মার মুভি দেখতে শুরু করি, তখন চোখ সরাতে পারিনা !! আপনার দখল পড়তে শুরু করার পর রাতের খাবারের কথা ভুলে গিয়েছিলাম ….!!
আপনি আপনার লেখা দিয়ে যা মানুষকে বোঝাতে চেয়েছেন বা যে মেসেজ দিতে চেয়েছেন, তার অন্যতম বিষয় গুলো :
১. ডেভিড ক্ষমা করার কারণে বা ক্ষমাশীল হওয়ায় আন্ডারওয়াল্ড এর সবচেয়ে ক্ষমতাধর ডন হতে পারে !! তা আপনি যুক্তি সহ প্রমান দিয়েছেন লিটনের মৃত্যু দিয়ে…!! ক্ষমা করাও অনেক বড় ক্ষমতার প্রয়োজন এবং ইহা অনেক শক্তিশালী একটি গুন্..!!
২. আপনি বলেছেন “নারীর মন স্পর্শ না করে, তার দেহ স্পর্শ করাটা বর্বরতা !!” আমি ১০০% একমত এবং আমার সবচেয়ে পছন্দের বাক্য এটি এই পুরো উপন্যাসে…!!
৩. আপনি বুঝিয়েছেন কোন শিল্পী বা কবি যদি হিংস্র হয়, তার চেয়ে বেশি হিংস্র কেও হতে পারেনা !! তার প্রমান আপনার গল্পের কবি অনিন্দ্য আকাশ !!
৪. দস্তগীর চরিত্রটা হয়তো অনেকের পরিচিত মুখ এবং হয়তো সে এখন আমাদের দেশের বর্তমান তথ্য মন্ত্রণালয়ে আছেন !! গল্পে হয়তো স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় …..:):):):)…..
৫. আপনি বুঝিয়েছেনা একটি কবিতা বা গান বা শিল্প দিয়ে সমাজ, দেশ বা গোটা পৃথিবী পরিবর্তন করা সম্ভব !! যেমন জেনিফার ডেভিডকে করতে পেরিছিলো !!
৬. আপনি বুঝিয়েছে নাস্তিক রাও পূজা করে কাল মার্ক্স্ এবং লেনিনদের…!! খাঁটি সত্য কথা …..
আরো অনেক কিছু…..
যেই বিষয়গুলো তে তেমন খুশি হতে পারিনি বা কষ্ট পেয়েছি :
১. গল্পের শেষ মুহূর্তে খুব কষ্ট পেয়েছি !! আমি মেনে নিতে পারিনি !! মন খারাপ হয়ে গিয়েছিল খুব….
২. যখন জেনিফার ডেভিডকে বলছিলো, আপনি একদিন আপনার অন্ধোকার জগৎকে ঠিকই আলোকিত করবেন !! তখন ডেভিড হেসে দিলেও ….. আমি বিশ্বাস করেছিলাম শেষে এমন কিছুই দেখবো !! কারণ, যেখানে এখন পর্যন্ত দেখে বা জেনে এসেছি অন্ধকার জগৎ থেকে কেও ফিরে আসতে পারেনা ইচ্ছা থাকলেও…..তারপরেও আমি ভেবে ছিলাম আপনি হয়তো নতুন কোন রাস্তা বা সমাধান দেখাবেন এই সমাজকে !!
সবশেষে বলবো, আপনার কাছে থেকে আমি বা আমার মতো অনেকেই অনেক কিছু শিখেছে কবিতা, সহজ কথায় অসাধারণ গান কিভাবে এতো সুন্দর করে লেখা যায় এবং সাহিত্য …….. এই জন্য আপনার কাছে আমাদের চাওয়া আরো বেশি…… সামনে আরো অসাধারণ কিছু লিখবেন..!! সেই কামনায় ……